বৃহস্পতিবার, ৭ জুন, ২০১৮

সাকিল সিরিজ ১


সাকিলের হাঁতুড়ি বাঁটাল, পর্ব ১

বিষয়:এদিকে এসো

রমনার বটমূলে দূর্বাঘাসের উপর একটি কলম পড়ে আছে ৷
এই কলম এদিকে আয় ৷ আরে কলম শুনতে পাচ্ছিস না৷ তোর শুভ আগমন আমার পরীক্ষা ভাল করবে ৷ আমার সম্পত্তি বৃদ্ধি করবে ৷ দুনিয়াকে বসবাসের উপযোগী করে তুলবে ৷
পিছন থেকে মাথায় থাপ্পর দিল রাসেল ৷ আরে সাকিল পাগল হলি নাকি, কলম কি তোর ডাকে সাঁড়া দেবে নাকি ৷ যতসব অবৈজ্ঞানিক কর্মকান্ড, ধর্মীয় গোড়ামি !
—তাই নাকি !
—নয়তো কি ! এখনও সময় আছে ধর্মীয় গোড়ামি ছেঁড়ে বিজ্ঞানমনস্ক হ ! বুঝলি ! লাভ হবে !
—আচ্ছা ! এই কলম দেখা যায়,ধরা যায়, ছোঁয়া যায়, ব্যবহার করা যায় ,তাকে ডাকাটা না হয় অবৈজ্ঞানিক বুঝলাম ! কিন্তু যাকে কেবল গণনা করা যায়, ধরা যায় না, ছোঁয়া যায় না, ব্যবহার করা যায় না এমন মাসকে বা মাসের প্রথম দিনকে এসো হে বৈশাখ বা শুভ নববর্ষ বলাটা কতটা বৈজ্ঞানিক, উপরন্তু সেই উপলক্ষে মঙ্গল শোভাযাত্রা, ব্যানার, ফেস্টুন, প্ল্যাকার্ড, উল্কি আঁকা,গান বাজনা, আল্পনা আঁকা, রাস্তা বন্ধ করে মানুষকে কষ্ট দেওয়া, ইলিশ পানতা খাওয়া ইত্যাদি কতটা বৈজ্ঞানিক ৷ আবার সেই উপলক্ষে নারীকে নিত্য নতুন সাজে রাস্তায় বের করা কতটা বৈজ্ঞানিক ! কোন বৈজ্ঞানিক এগুলো আবিস্কার করল ৷ কোন ল্যাবের রাসায়নিক বিক্রিয়ায় তা আবিস্কার হলো !
রাসেল মাথা নিচু করে ! সাকিল বলেই যাচ্ছে !
—শোন ! কলম বা অন্য যাইকিছু হোক না কেন আমরা মুসলিমরা এগুলোকে আহবান করাকে সবেচেয়ে বড় মুর্খতা ও জ্ঞানপাপ দ্বারা বেষ্টিত অনাধুনিক কর্মকান্ড, নিজের মর্যাদা নষ্ট করার মত কাজ মনে করি ৷ আরবিতে একে বলা হয় শিরক ( ﺍﻟﺸﺮﻙ) !
পবিত্র কোরআন বলছে—
ﺍﻥ ﺍﻟﺸﺮﻙ ﻟﻈﻠﻢ ﻋﻈﻴﻢ ٥
"নিশ্চয়ই নিশ্চয়ই শিরক হলো সবচেয়ে বড় জুলুম !"(সূরা লুক্বমান ৩১:১৩)
ﻭﻣﻦ ﻳﺸﺮﻙ ﺑﺎﻟﻠﻪ ﻓﻘﺪ ﺿﻞ ﺿﻠﻼ ﺑﻌﻴﺪﺍ -
"আর নিশ্চয়ই যে আল্লাহর সাথে শিরকে লিপ্ত হয় নিশ্চয়ই সে সুদূর গোমরাহিতে নিমজ্জিত হয় !"(সূরা নিসা ৪:১১৬)
আর আমাদের মহান আল্লাহ সফলতার অনেকগুলো মাপকাঁঠি আমাদের শিখিয়েছেন তাঁর একটি হলো
ﻭﺍﻟﺬﻳﻦ ﻫﻢ ﻋﻦ ﺍﻟﻠﻐﻮ ﻣﻌﺮﺻﻮﻥ ٥
"আর তাঁরা অনর্থক কথা ও কাজে লিপ্ত হয় না !"(সূরা মু'মিনুন ২৩:৩)
রাসূল ( ﺻﻠﻲ ﺍﻟﻠﻪ ﻋﻠﻴﻪ ﻭﺳﻠﻢ ) বলেছেন,
ﻣﻦ ﺣﺴﻦ ﺍﻟﺴﻼﻡ ﺍﻟﻤﺮﺉ ﺗﺮﻛﻪ ﻣﺎ ﻻ ﻳﻌﻨﻴﻪ —
"ইসলামের সৌন্দর্যের মধ্যে একটি হলো অনর্থক কথা ও কাজে লিপ্ত না হওয়া ! "(সুনান ইবনে মাজাহ, অধ্যায় ৩০: কলহ- বিপর্যয়, অনুচ্ছেদ ১২, হাদীস ৩৯৭৬, হাদীসের মান: আলবানী বলেছেন সহীহ)
তাই আমরা মুসলিমরা বিশেষ কোন দিন নয় বরং প্রতিটি দিনকেই গুরুত্ব দেই ৷ কোন অনর্থক, ফাল্তু, হারাম বা শিরক বা বিদআতি কাজে লিপ্ত হই না ৷ কারণ আমরা হলাম দুনিয়ার সেই ছাত্র যারা পরীক্ষাপূর্বক্ষণের একেকটা সেকেন্ডের মূল্য বোঝে ! আমরাই সবচাইতে আধুনিকতা ও আত্নমর্যাদা বোধ সম্পন্ন প্রাণী ! সুতরাং যাদের কাছে 'ফ' একার ফে+ল = পাস ! তারাই মূলত এমন মূর্খ, জ্ঞানপাপী ও অবৈজ্ঞানিক লোকদের মত কাজ করে থাকে ৷
তাই মহান আল্লাহ সত্যিই বলেছেন,
ﻭﻣﻦ ﺍﺣﺴﻦ ﻣﻦ ﺍﻟﻠﻪ ﺻﺒﻐﺔ - ﻭﻧﺤﻦ ﻟﻪ ﻋﺒﺪﻭﻥ ٥
"আর তাঁর রঙের চাইতে উত্তম রঙ আর কে দিতে পারে ৷ আর আমরা তাঁরই ইবাদত করে থাকি ! "(সূরা বাক্বারাহ ২:১৩৮)
রাসেল বলল, সাকিল ! তোর কথাগুলো আমার কাছে খুব যৌক্তিক মনে হলো ৷ কখনও এভাবে আমাকে কেউ বুঝায়নি ৷ তুই প্রথম !
চল এখন উঠি ! বাড়ি যেতে হবে
- চল !
এভাবে দুজনেই প্রস্হান করল !

এদিকে এসো / মেরাজুল ইসলাম প্রিয়

কোন মন্তব্য নেই:

একটি মন্তব্য পোস্ট করুন