শুক্রবার, ৩ আগস্ট, ২০১৮

যদি লক্ষ্য থাকে অটুট



যদি লক্ষ্য থাকে অটুট
বিশ্বাস হৃদয়ে
হবে হবেই দেখা
দেখা হবে বিজয়ে........................

যখন লক্ষ্যই তোমার আল্লাহর সন্তুষ্টি, যখন লক্ষ্যই তোমার আল্লাহর তাওহীদের অমীয় বাণী পৌছে দেওয়া, যখন লক্ষ্যই তোমার শিরক ও বিদআতকে নিশ্চিণ্হ করা, যখন তোমার লক্ষ্যই হলো কুরআন ও সুন্নাহকে আঁকড়ে ধরা ,যখন লক্ষ্যই তোমার মানুষের নিরাপত্তা নিশ্চিত করা, যখন লক্ষ্যই তোমার ইসলামের নামে বা অন্য কোন হেতুতে হরতাল, অবরোধ, বোমাবাজী, বিশৃঙ্খলা ,সন্ত্রাসবাদ, জঙ্গীবাদ ও তাদের অপব্যাখ্যার বিরুদ্ধে রূখে দাড়ানো, যখন লক্ষ্যই তোমার সংস্কৃতির নামে অপসংস্কৃতি দূর করা, যখন লক্ষ্যই তোমার মুসলিমদের কল্যান কামনা ও ঝগড়া বিবাদ দূর করা, যখন লক্ষ্যই তোমার ফেরক্বাবন্দীর বিরুদ্ধ রূখে দাড়ানো, যখন লক্ষ্যই তোমার নাস্তিক, মুরতাদ ও ইহুদী-খ্রিষ্টান
দের ষড়যন্ত্রের ব্যাপারে মুসলিমদের সতর্ক করা, যখন লক্ষ্যই তোমার সুনিয়ণ্ত্রীত ইসলামী প্রজাতন্ত্র তখন তোমাকে কে রুখতে পারে যখন আল্লাহ সর্বশক্তিমান ও সর্বময় ক্ষমতার একমাত্র অধিকারী আর তোমার ভরসা কেবল তাকে কেন্দ্র করেই ৷
তুমি কি আল্লাহর এই বাণী পড়ে দেখনি
ﺍﻥ ﻳﻨﺼﺮﻛﻢ ﺍﻟﻠﻪ ﻓﻼ ﻏﺎﻟﺐ ﻟﻜﻢ ﻭﺍﻥ ﻳﺨﺬﻟﻜﻢ ﻓﻤﻦ ﺫﺍ ﺍﻟﺬﻱ ﻳﻨﺼﺮﻛﻢ ﻣﻦ ﺑﻌﺬﻩ ، ﻭﻋﻠﻲ ﺍﻟﻠﻪ ﻓﻠﻴﺘﻮﻛﻞ ﺍﻟﻤﺆﻣﻨﻮﻥ٥
"যদি আল্লাহ তোমাকে সাহায্য করেন তবে কেউ তোমার উপর বিজয়ী হতে পারবে না আর যদি তিনি তোমাকে সাহায্য না করেন কবে তবে এরপর কে আছে যে তোমাকে সাহায্য করবে ৷ আর মুমিনদের একমাত্র আল্লাহর উপরই ভরসা করা উচিত ৷"( সূরা ইমরান ৩:১৬০)
ﻭﺍﻟﺬﻳﻦ ﺟﺎﻫﺪﻭﺍ ﻓﻴﻨﺎ ﻟﻨﻬﺪﻳﻨﻬﻢ ﺳﺒﻠﻨﺎ، ﻭﺍﻥ ﺍﻟﻠﻪ ﻟﻤﻊ ﺍﻟﻤﺤﺴﻨﻴﻦ ٥
" আর যারা আমার পথে চেষ্টা ও সংগ্রাম চালাবে আমি অবশ্যই তাদের জন্য আমার পথ দেখিয়ে দেব ৷ আর নিশ্চিয়ই নিশ্চয়ই আল্লাহ মুহসিনদের সাথে রয়েছেন ৷"( সূরা আনকাবূত ২৯:৬৯)
তুমি তো এমন এক পথের পথিক যার রাস্তা অত্যন্ত কন্টরাকীর্ণময় , অত্যন্ত বিপদসংকুল ৷ আর এর চুড়ান্ত গন্তব্যে রয়েছে জান্নাত ৷ আর তাও অতি সন্নিকটে !
না না ! এটি আমার কথা নয় বরং এই কথা তিনি বলেছেন যিনি তোমার আমার থেকে শ্রেষ্ঠ, যিনি ছিলেন আল্লাহ প্রেরিত মানবতার মহান মুক্তিদূত বিশ্বনবী মুহাম্মাদুর রাসূলুল্লাহ ( ﺻﻠﻲ ﺍﻟﻠﻪ ﻋﻠﻴﻪ ﻭﺳﻠﻢ ) ৷
তিনি বলেছেন,
ﺣﺠﺒﺖ ﺍﻟﺠﻨﺔ . ﺑﺎﻟﻤﻜﺎﺭﻩ
"জান্নাতকে ঘিরে রাখা হয়েছে কষ্টদায়ক বস্তু দ্বারা ৷"( সহীহ বুখারী, অধ্যায় ৮১: সদয় হওয়া পর্ব, অনুচ্ছেদ ২৮, হাদীস ৬৪৮৭)
তিনি আরও বলেছেন,
ﺍﻟﺠﻨﺔ ﺍﻗﺮﺏ ﺍﻟﻲ ﺍﺣﺪﻛﻢ ﻣﻦ ﺷﺮﺍﻙ ﻧﻌﻠﻪ
"জান্নাত তোমাদের জুতার ফিতার চাইতেও অধিক নিকটবর্তী ৷"( সহীহ বুখারী, অধ্যায় ৮১: সদয় হওয়া পর্ব, অনুচ্ছেদ , হাদীস ৬৪৮৮)
সুতরাং তুমি পিছপা হয়ো না ৷ কেননা যদিও সে পথ কন্টকাকীর্ণময়, যদিও তা অত্যন্ত বিপদসংকুল, যদিও তাঁর প্রতিটি পদে তোমায় বাঁধার শিকার হতে হবে তবুও জেনে রাখো সে পথেই তোমার জন্য রয়েছে স্বস্তি ! রয়েছে শান্তির ঠিকানা ! আর এই নিশ্চয়তাই দিয়েছেন মহান আল্লাহ তাআলা
ﻓﺎﻥ ﻣﻊ ﺍﻟﻌﺴﺮ ﻳﺴﺮﺍ ٥ ﺍﻥ ﻣﻊ ﺍﻟﻌﺴﺮ ﻳﺴﺮﺍ ٥
"অতএব নিশ্চয়ই কষ্টের সাথেই স্বস্তি রয়েছে ৷ নিশ্চয়ই কষ্টের সাথেই স্বস্তি রয়েছে ৷"(সূরা ইনশিরাহ ৯৪:৫-৬)
এই পথেরই পথিক ছিলেন নূহ ( ﻋﻠﻴﻪ ﻭﺳﻠﻢ ) , ছিলেন লুত ( ﻋﻠﻴﻪ ﻭﺳﻠﻢ ), ছিলেন সালেহ ( ﻋﻠﻴﻪ ﻭﺳﻠﻢ ), ছিলেন মুসা ( ﻋﻠﻴﻪ ﻭﺳﻠﻢ ), ছিলেন ঈসা ( ﻋﻠﻴﻪ ﻭﺳﻠﻢ ), ছিলেন হুদ ( ﻋﻠﻴﻪ ﻭﺳﻠﻢ ), ছিলেন ইব্রাহীম ( ﻋﻠﻴﻪ ﻭﺳﻠﻢ ) ও সর্বশেষ নবী মুহাম্মাদুর রাসূলুল্লাহ ( ﺻﻠﻲ ﺍﻟﻠﻪ ﻋﻠﻴﻪ ﻭﺳﻠﻢ ) সহ আরও অনেক নবী ৷
শুধু তাই নয় সেই পথকেই আগলিয়ে রেখেছিল আসহাবে কাহাফের যুবকগণ, রেখেছিল আসহাবে উখদূদের ঘটনায় উল্লেখিত সেই যুবক ও আরও যারা ইমান এনেছিল তারা !
আহ ! কতই না সংগ্রাম করতে হয়েছিল তাদেরকে !
রাসূল ( ﺻﻠﻲ ﺍﻟﻠﻪ ﻋﻠﻴﻪ . ﻭﺳﻠﻢ ) সত্যই বলেছেন,
ﺍﻟﺪﻧﻴﺎ ﺳﺠﻦ ﺍﻟﻤﺆﻣﻦ ﻭﺟﻨﺔ ﺍﻟﻜﺎﻓﺮ —
"দুনিয়া মুমিনদের জেলখানা, আর কাফেরদের জান্নাত ৷"(সহীহ মুসলিম, পর্ব ৫৫, হাদীস ২৯৫৬)
কলেবর বড় হবে ভেবে পবিত্র কোরআন থেকে শুধু দুজন নবীর ওসীয়তের ঘটনা তোমাদের সামনে পেশ করব যা তাঁরা তাদের সন্তানদের করছিলেন ,যেন তুমি উপলব্ধি করতে পার তাঁরা তাদের সংগ্রামী জীবনে কতই না ব্যাস্ত ছিলেন:
ﻭﻭﺻﻲ ﺑﻬﺎ ﺍﺑﺮﺍﻫﻴﻢ ﺑﻨﻴﻪ ﻭﻳﻌﻘﻮﺏ ﻳﺎ ﺑﻨﻲ ﺍﻥ ﺍﻟﻠﻪ ﺍﺻﻄﻔﻲ ﻟﻜﻢ ﺍﻟﺪﻳﻦ ﻓﻼ ﺗﻤﻮﺗﻦ ﺍﻻ ﻭﺍﻧﺘﻢ ﻣﺴﻠﻤﻮﻥ ٥ ﺍﻡ ﻛﻨﺘﻢ ﺷﻬﺪﺍﺀ ﺍﺫ ﺣﻀﺮ ﻳﻌﻘﻮﺏ ﺍﻟﻤﻮﺕ، ﺍﺫ ﻗﺎﻝ ﻟﺒﻨﻴﻪ ﻣﺎ ﺗﻌﺒﺪﻭﻥ ﻣﻦ ﺑﻌﺪﻱ، ﻗﺎﻟﻮﺍْ ﻧﻌﺒﺪ ﺍﻟﻬﻚ ﻭﺍﻟﻪ ﺀﺍﺑﺎﺋﻚ ﺍﺑﺮﺍﻫﻴﻢ ﻭﺍﺳﻤﻌﻴﻞ ﻭﺍﺳﺤﻖ ﺍﻟﻬﺎ ﻭٰﺣﺪﺍ ﻭﻧﺤﻦ ﻟﻪ ﻣﺴﻠﻤﻮﻥ ٥
"আর ইব্রাহীম ও ইয়াকূব তার সন্তানদের ওসীয়ত করছিল: 'হে আমার সন্তানগণ ! নিশ্চয়ই আল্লাহ তোমাদের জন্য এ দ্বীনকে মনোনীত করেছেন ৷ অতএব তোমরা মুসলিম না হয়ে মৃত্যুবরণ করো না ৷
তোমরা কি উপস্হিত ছিলে ইয়াকুবের মৃত্যুর সময় ! যখন সে তাঁর সন্তারদেরকে বলেছিল: আমার মৃত্যুর পর তোমরা কার ইবাদত করবে ৷ তাঁরা বলল: আমার কেবল আপনার মা'বুদের ইবাদত করব এবং আপনার পিতৃপুরুষ ইব্রাহীম, ইসমাঈল ও ইসহাকের মা'বুদের ইবাদত করব যিনি একক ও অদ্বিতীয় ৷ আর আমরা তাঁরই কাছে আত্নসমর্পণকারী ৷"( সূরা বাক্বারাহ -২:১৩২-১৩৩)
তাই তোমার ভাই হিসেবে আবারও অনুরোধ রইল তুমি পিছপা হয়ো না ! আর সেই চলার পথে রাসূল ( ﺻﻠﻲ ﺍﻟﻠﻪ ﻋﻠﻴﻪ ﻭﺳﻠﻢ ) এর নিম্নোক্ত কথাটি সাথে রেখো যা তিনি ইবনে আব্বাস ( ﺭﺿﻲ ﺍﻟﻠﻪ ﻋﻨﻪ ) কে শিক্ষা দিয়েছিলেন ৷
ইবনে আব্বাস ( ﺭﺿﻲ ﺍﻟﻠﻪ ﻋﻨﻪ ) বলেন,
ﻛﻨﺖ ﺧﻠﻒ ﺭﺳﻮﻝ ﺍﻟﻠﻪ ﺻﻠﻲ ﺍﻟﻠﻪ ﻋﻠﻴﻪ ﻭﺳﻠﻢ ﻳﻮﻣﺎ ﻓﻘﺎﻝ ﻳﺎ ﻏﻼﻡ ﺍﻧﻲ ﺍﻋﻠﻤﻚ ﻛﻠﻤﺎﺕ ﺍﺣﻔﻆ ﺍﻟﻠﻪ ﻳﺤﻔﻈﻚ ﺍﺣﻔﻆ ﺍﻟﻠﻪ ﺗﺠﺪﻩ ﺗﺠﺎﻫﻚ ﺍﺫﺍ ﺳﺄﻟﺖ ﻓﺎﺳﺌﻞ ﺍﻟﻠﻪ ﻭﺍﺫﺍ ﺍﺳﺘﻌﻨﺖ ﻓﺎﺳﺘﻌﻦ ﺑﺎﻟﻠﻪ ﻭﺍﻋﻠﻢ ﺍﻥ ﺍﻻﻣﺔ ﻟﻮ ﺍﺟﺘﻤﻌﺖ ﻋﻠﻲ ﺍﻥ ﻳﻨﻔﻌﻮﻙ ﺑﺸﻲﺀ ﻟﻢ ﻳﻨﻔﻌﻮﻙ ﺍﻻ ﺑﺸﻲﺀ ﻗﺪ ﻛﺘﺒﻪ ﺍﻟﻠﻪ ﻟﻚ ﻭﻟﻮ ﺍﺟﺘﻤﻌﻮﺍ ﻋﻠﻲ ﺍﻥ ﻳﻀﺮﻭﻙ ﺑﺸﻲﺀ ﻟﻢ ﻳﻀﺮﻭﻙ ﺍﻻ ﺑﺸﻲﺀ ﻗﺪ ﻛﺘﺒﻪ ﺍﻟﻠﻪ ﻋﻠﻴﻚ ﺭﻓﻌﺖ ﺍﻻﻗﻼﻡ ﻭﺟﻔﺖ ﺍﻟﺼﺤﻒ -
"একদিন আমি আল্লাহর রাসূল ( ﺻﻠﻲ ﺍﻟﻠﻪ ﻋﻠﻴﻪ ﻭﺳﻠﻢ ) এর পিছনে (সওয়ারীর উপর) বসা অবস্হায় ছিলাম ৷ তখন তিনি বললেন:
' হে বৎস ! আমি তোমাকে কিছু কথা শিক্ষা দিচ্ছি ! তুমি আল্লাহর দ্বীনের হেফাজত কর, আল্লাহ তোমার হেফাজত করবেন ৷ তুমি আল্লাহর দ্বীনের হেফাজত কর তবে তুমি আল্লাহর রহমতকে তোমার সামনে দেখতে পাবে ৷ যখন কিছু চাইবে, আল্লাহর কাছে চাইবে ৷ যখন সাহায্যের প্রয়োজন হবে, আল্লাহর কাছে সাহায্য চাইবে ৷ আর জেনে রাখো, যদি সমগ্র মানবজাতি তোমার উপকার করার জন্য একত্রিত হয় তবু তাঁরা তোমার বিন্দুমাত্র উপকার করতে পারবে না তবে যতটুকু আল্লাহ চাইবেন ততটুকু পারবে ৷ আর যদি সমগ্র মানবজাতি তোমার ক্ষতি করার জন্য একত্রিত হয় তবু তাঁরা তোমার বিন্দুমাত্র ক্ষতি করতে পারবে না তবে যতটুকু আল্লাহ তোমার ব্যাপারে নির্ধারণ করেছেন ততটুকু পারবে ৷ কলমসমূহ উঠিয়ে নেয়া হয়েছে এবং কাগজসমূহ শুকিয়ে গেছে ৷' "(সুনান তিরমিযী, অধ্যায় ৩৫: কিয়ামত পর্ব, অনুচ্ছেদ ৩৫, হাদীস ২৫১৮, হাদীসের মান: আবূ ঈসা তিরমিযী বলেছেন হাসান- সহীহ, আলবানী বলেছেন সহীহ)
সুতরাং—
এগিয়ে চলো তুমি !
এগিয়ে চলো তুমি !
জীবন থেকে মুছে ফেল
সকল আঁধার গ্লানী !
এগিয়ে চলো তুমি !
এগিয়ে চলো তুমি !
মুক্তির স্বপ্ন বুকে নিয়ে
হৃদয়ের আঙিনায় ফুল ফুঁটিয়ে
চল তুমি দৃপ্ত পদে
বাঁধার প্রাচির সব মাড়িয়ে়়়়়়়়়়়়়

যদি লক্ষ্য থাকে অটুট /মেরাজুল ইসলাম প্রিয়

কোন মন্তব্য নেই:

একটি মন্তব্য পোস্ট করুন