শুক্রবার, ৩ আগস্ট, ২০১৮

পাখি


পাখির ডাকে ঘুম ভেঙে যায়
মিষ্টি সুরের রেশ
হলুদ গায়ে রোদের ঝিলিক
দেখতে লাগে বেশ ়়়়়়়়়়়়়়়়়

সকল প্রশংসা সমস্ত সৃষ্টিজগতের একমাত্র রব আল্লাহ তাআলার জন্য যিনি রূপদাতা, যিনি তাঁর সৃষ্টিকে সৌন্দর্যমন্ডীত করে সৃষ্টি করেছেন ৷ আর অসংখ্য দরুদ ও সালাম মানবতার মহান মুক্তিদূত বিশ্বনবী মুহাম্মদ ( ﺻﻠﻲ ﺍﻟﻠﻪ ﻋﻠﻴﻪ ﻭﺳﻠﻢ ) এর প্রতি ৷
আজ আমরা আল্লাহর অসংখ্য নেয়ামতের মধ্যে পাখি নিয়ে সংক্ষিপ্ত আলোচনা করব ৷ আল্লাহ তাআলা বলেন,
ﺍﻭﻟﻢ ﻳﺮﻭ ﺍﻟﻲ ﺍﻟﻄﻴﺮ ﻓﻮﻗﻬﻢ ﺻﻔﺖ ﻭﻳﻘﺒﻀﻦ، ﻣﺎ ﻳﻤﺴﻜﻬﻦ ﺍﻻ ﺍﻟﺮﺣﻤﻦ، ﺍﻥ ﺍﻟﻠﻪ ﺑﻜﻞ ﺷﻲﺀ ﺑﺼﻴﺮ٥
"তারা কি তাদের মাথার উপর উড়ন্ত পক্ষীকুলের প্রতি দৃষ্টি দেয় না যারা পাখা বিস্তারকারী ও সংকোচনকারী ৷ কেবল দয়াময় আল্লাহই তাদেরকে স্হীর রাখেন ৷ নিশ্চয়ই আল্লাহ সবকিছু দেখেন ৷"(সূরা মুলক ৬৭:১৯)
ﺍﻟﻢ ﻳﺮﻭﺍ ﺍﻟﻲ ﺍﻟﻄﻴﺮ ﻣﺴﺨﺮﺕ ﻓﻲ ﺟﻮ ﺍﻟﺴﻤﺎﺀ ﻣﺎ ﻳﻤﺴﻜﻬﻦ ﺍﻻ ﺍﻟﻠﻪ، ﺍﻥ ﻓﻲ ﺫٰﻟﻚ ﻻﻳﺖ ﻟﻘﻮﻡ ﻳﺆﻣﻨﻮﻥ ٥
"তারা কি আকাশের মধ্যভাগে উড়ন্ত পাখির প্রতি দৃষ্টিপাত করে না? একমাত্র আল্লাহ ছাড়া কেউ এভাবে ধরে রাখতে পারে না ৷ নিশ্চয়ই এতে নিদর্শন রয়েছে বিশ্বাসী জাতির জন্য ৷ "( সূরা নাহল ১৬:৭৯)
পাখিদের উড়ার মধ্যে এক বিষ্ময়কর সুপরিকল্পিত কৌশল লক্ষ্য করা যায় ৷ পাখিদের এই উড়ার কৌশলটি আমরা নিউটনের গতির তৃতীয় সূত্র (Third law of motion) অনুযায়ী ব্যাখ্যা করতে পারি ৷ নিউটনের সূত্রটি হচ্ছে:
Every cations has equal and opposite reaction
অর্থাৎ প্রত্যেক ক্রিয়ারই একটি সমান ও বিপরীত প্রতিক্রিয়া আছে৷
পাখিরা মধ্যাকর্ষণ শক্তির বিপরীতে মধ্যাকর্ষণ শক্তিকে ভেদ করে উপরে উঠতে থাকে ৷ পাখি যখন নিচের দিকে ডানা ঝাপটায় তখন প্রতিক্রিয়া বল ডানার বিপরীত দিকে ক্রিয়া করে ৷ এই শক্তি আবার সম্মুখ ও উপরিভাগের গঠন অংশে রূপান্তরিত হয়ে ধাক্কার সৃষ্টি করে ৷ ফলে পাখি মধ্যাকর্ষণ শক্তির বিপরীতে উপরে উঠতে থাকে এবং সামনের দিকে অগ্রসর হয় ৷ পাখিরা আকাশে উড়ে বেড়াবার সময় দেহের সঙ্গে সম্পর্ক রেখে ডানাগুলো একবার সামনে এবং একবার পিছনের দিকে ঝাপটায় ৷ ফলে সম্মুখগামী ধাক্কার সৃষ্টি হয় ৷ এ সময় ডানা নিম্নগামী থাকে ৷ উপরে উঠার সময় ডানাগুলো উল্টো অবস্হায় আনা হয় যেন উচ্চমুখী শক্তির উন্মেষ ঘটে এবং যেন ডানাগুলো পশ্চাৎদিকে দ্রুতগতিতে নড়তে পারে ৷ আরও দু প্রকার উড়ার পদ্ধতি আছে ৷ Gliding flight এবং Soaring flight ৷ Gliding flight এর মাধ্যমে পাখি উপর থেকে নিচে নেমে আসে আর Soaring flight এর মাধ্য দিয়ে বাতাসের যে গতি উপর দিকে ক্রিয়া করে পাখি তাঁর সুবিধা লাভ করে ৷ বিশল সামুদ্রিক পাখি Albatross আকাশে উড়ে বেড়াতে Soaring flight অবলম্বন করে ৷ বাতাসে Soaring flight এর মাধ্যমে এলবাট্রস অত্যন্ত জোড়ালো গতি শক্তি লাভ করে উপরে উঠতে থাকে, অতঃপর Gliding flight এর মাধ্যমে পাখি বহুদূর পর্যন্ত চলে যায় এবং সমুদ্রের উপরিভাগের বিভিন্ন অংশ থেকে খাদ্য সঞ্চয় করে ৷ পাখির ডানার পালকগুলো পাখিকে অত্যন্ত শক্তিশালী নভোচারী হতে সাহায্য করে৷ এদের ডানাগুলো খুবই সুক্ষ্য ও জটিল কারুকার্য খচিত এবং খুবই অপূর্ব বস্তু ৷ পালকগুলো গঠনগতভাবে অত্যন্ত হালকা প্রকৃতির হলেও গঠনগতভাবে খুবই মজবুত ৷ পালকগুলো গোড়ার দিক দিয়ে দৃঢ় কিন্তু নমনীয় ৷ একারণেই পাখিরা উড়ার সময় দক্ষতা দেখাতে পারে ৷ পালকগুলোতে রয়েছে অসংখ্য সুতাতন্তু ৷ তন্তুগুলো জ্যামিতিক কর্ণের মত তির্যক প্রকৃতির ৷ প্রতিটি তন্তুর রয়েছে আবার অসংখ্য পার্শ্ব তন্তু ৷ প্রতিটি তন্তু অপর পার্শ্ব তন্তুর উপর ঝুঁকে থাকে ৷ এই অত্যন্ত সুপরিকল্পিত কারুকার্য ও শিল্পশৈলি একথাই বারবার সুস্পষ্টভাবে ব্যাক্ত করে যে, পাখিদের উড়ে বেড়ানোর ক্ষেত্রে ডানার অবদান একমাত্র পরম দয়ালু আল্লাহ তাআলা প্রদত্ত এক বিশেষ নেয়ামত ৷ (বিস্তারিত পড়ুন: SCIENCE FROM AL QURAN, মুহাম্মদ আবূ তালেব, পৃষ্ঠা ২৫২-২৫৪)
আপনি জানেন কি পবিত্র কোরআনে পাখিকে কেন্দ্র করে বর্ণিত হয়েছে অপরূপ কিছু চিত্তাকর্ষক মহাসত্যের ঘটনা যা মুমিন হৃদয়কে প্রশান্তি দান করে ৷ যা আল্লাহ সম্পর্কে মুমিনকে সুস্পষ্ট ও সুন্দর ধারনার দিকে নিয়ে যায় এবং জানায় যে, আল্লাহ এক মহাজ্ঞানী সত্তা যার জ্ঞান অসীম, চুড়ান্ত ও তুলনাহীন এবং এও জানায় যে, আল্লাহ মহাপরাক্রমশালী ও সর্বশক্তিমান যা চুড়ান্তভাবে ও তুলনাহীনভাবে কেবল এবং কেবল তাঁর জন্যই প্রযোজ্য ৷
পাখির নিদর্শন দিয়েই প্রশান্ত করা হয়েছিল ইব্রাহীম ( ﻋﻠﻴﻪ ﻭﺳﻠﻢ ) এর অন্তরকে
ﻭﺍﺫ ﻗﺎﻝ ﺍﺑﺮﺍﻫﻴﻢ ﺭﺏ ﺍﺭﻧﻲ ﻛﻴﻒ ﺗﺤﻲ ﺍﻟﻤﻮﺗﻲ، ﻓﺎﻝ ﺍﻭﻟﻢ ﺗﺆﻣﻦ، ﻗﺎﻝ ﺑﻠﻲ ﻭﻟﻜﻦ ﻟﻴﻄﻤﺌﻦ ﻗﻠﺒﻲ، ﻗﺎﻝ ﻓﺨﺬ ﺍﺭﺑﻌﺔ ﻣﻦ ﺍﻟﻄﻴﺮ ﻓﺼﺮﻫﻦ ﺍﻟﻴﻚ ﺛﻢ ﺍﺟﻌﻞ ﻋﻠﻲ ﻛﻞ ﺟﺒﻞ ﻣﻨﻬﻦ ﺟﺰﺀﺍ ﺛﻢ ﺍﺩﻋﻬﻦ ﻳﺄﺗﻴﻨﻚ ﺳﻌﻴﺎ، ﻭﺍﻋﻠﻢ ﺍﻥ ﺍﻟﻠﻪ ﻋﺰﻳﺰ ﺣﻜﻴﻢ ٥
"স্মরণ কর, যখন ইব্রাহীম বলল, হে আমার রব ! আমাকে দেখাও, কিভাবে তুমি মৃতকে জীবিত কর ! আল্লাহ বললেন, তুমি কি বিশ্বাস কর না ! সে বলল, অবশ্যই বিশ্বাস করি তবে দেখতে এজন্য চাইছি যেন অন্তরে প্রশান্তি লাভ করতে পারি ৷ আল্লাহ বললেন, তবে চারটি পাখি নাও অতঃপর সেগুলোকে নিজের পোষ মানিয়ে নাও ৷ অতঃপর পাখির (মিশ্রনের) প্রতিটি অংশকে একেকটি পাহাড়ের ওপর রেখে আস অতঃপর সেগুলোকে ডাক , তোমার দিকে দৌড়ে চলে আসবে ৷ আর জেনে রাখ, নিশ্চয়ই আল্লাহ অত্যন্ত পরাক্রমশালী, প্রজ্ঞাময় ৷"(সূরা বাক্বারাহ ২:২৬০)
সুলায়মান ( ﻋﻠﻴﻪ ﻭﺳﻠﻢ ) এর জন্য আল্লাহর পক্ষ থেকে সৈন্য হিসেবে পাখিকে নির্ধারিত হয়েছিল
ﻭﺣﺸﺮ ﻟﺴﻠﻴﻤﻦ ﺟﻨﻮﺩﻩ ﻣﻦ ﺍﻟﺠﻦ ﻭﺍﻻﻧﺲ ﻭﺍﻟﻄﻴﺮ ﻓﻬﻢ ﻳﻮﺯﻋﻮﻥ ٥
"অতঃপর জ্বিন, মানুষ ও পাখির মধ্য থেকে সুলাইমানের সামনে তাঁর সেনাবাহিনীকে হাযির করা হলো ৷ অতঃপর তাদেরকে বিভিন্ন ব্যুহে বিভক্ত করা হলো ৷"( সূরা নামল ২৭:১৭)
পাখি দিয়েই ধ্বংস করা হয়েছিল আবরাহার হাতি বাহিনীকে
ﺍﻟﻢ ﺗﺮ ﻛﻴﻒ ﻓﻌﻞ ﺭﺑﻚ ﺑﺎﺻﺤٰﺐ ﺍﻟﻔﻴﻞ٥ ﺍﻟﻢ ﻳﺠﻌﻞ ﻛﻴﺪﻫﻢ ﻓﻲ ﺗﻀﻠﻴﻞ ٥ ﻭﺍﺭﺳﻞ ﻋﻠﻴﻬﻢ ﻃﻴﺮﺍ ﺍﺑﺎﺑﻴﻞ ٥ ﺗﺮﻣﻴﻬﻢ ﺑﺤﺠﺎﺭﺓ ﻣﻦ ﺳﺠﻴﻞ ٥ ﻓﺠﻌﻠﻬﻢ ﻛﻌﺼﻒ ﻣﺄﻛﻮﻝ ٥
"তুমি কি দেখনি তোমার রব কি করেছিলেন হস্তীবাহিনীর প্রতি ? তিনি কি তাদের কৌশল ব্যার্থ করে দেননি ? তিঁনি তাদের তাদের প্রতি ঝাঁকের ঝাঁক পাখি পাঠালেন যারা তাদের উপর পাথরের কংকর নিক্ষেপ করছিল ৷ অতঃপর তাঁরা হয়ে ভক্ষিত তৃণের মত ৷"( সূরা ফীল ১০৫:১-৫)
আপনি জানেন কি পাখির থেকে আমাদের শেখার বিষয় রয়েছে ৷ আর তা হচ্ছে কোমল হৃদয়ের অধিকারি হওয়া, আল্লাহর অনুগ্রহ অন্বেষণের চেষ্টা করা ও একমাত্র আল্লাহর প্রতি ভরসা করতে শেখা ৷
না না ! এমনটি আমি বলিনি বরং যিনি আমাদের সবার থেকে শ্রেষ্ঠ, যিনি ছিলেন আল্লাহর মনোনীত বান্দা, যিনি ছিলেন মানবতার মহান মুক্তিদূত, সেই বিশ্বনবী মুহাম্মাদুর রাসূলুল্লাহ ( ﺻﻠﻲ ﺍﻟﻠﻪ ﻋﻠﻴﻪ ﻭﺳﻠﻢ ) এমনটি বলেছেন ৷ নিচের দুটি হাদীসের মনোযোগ দিলেই তা বুঝে আসবে ৷
ﺣﺪﺛﻨﺎ ﺣﺠﺎﺝ ﺑﻦ ﺍﻟﺸﺎﻋﺮ ﺣﺪﺛﻨﺎ ﺍﺑﻮ ﺍﻟﻨﻀﺮ ﻫﺎﺷﻢ ﺑﻦ ﺍﻟﻘﺎﺳﻢ ﺍﻟﻠﻴﺜﻲ ﺣﺪﺛﻨﺎ ﺍﺑﺮﺍﻫﻴﻢ ﻳﻌﻦ ﺍﺑﻦ ﺳﻌﺪ ﻋﻦ ﺍﺑﻲ ﻋﻦ ﺍﺑﻲ ﺳﻠﻤﺔ ﻋﻦ ﺍﺑﻲ ﻫﺮﻳﺮﺓ ﻋﻦ ﺍﻟﻨﺒﻲ ﺻﻠﻲ ﺍﻟﻠﻪ ﻋﻠﻴﻪ ﻭﺳﻠﻢ ﻗﺎﻝ ﻳﺪﺧﻞ ﺍﻟﺠﻨﺔ ﺍﻗﻮﺍﻡ ﺍﻓﺌﺪﺗﻬﻢ ﻣﺜﻞ ﺍﻓﺌﺪﺕ ﺍﻟﻄﻴﺮ
আবু হুরায়রা ( ﺭﺿﻲ ﺍﻟﻠﻪ ﻋﻨﻪ ) থেকে বর্ণিত, নবী ( ﺻﻠﻲ ﺍﻟﻠﻪ ﻋﻠﻴﻪ ﻭﺳﻠﻢ ) বলেছেন, "জান্নাতে প্রবেশ করবে ঐ সমস্ত লোক যাদের অন্তর পাখির মত ৷"(সহীহ মুসলিম, পর্ব ৫৩, অনুচ্ছেদ ১১, হাদীস ২৮৪০)
ﺣﺪﺛﻨﺎ ﻋﻠﻲ ﺑﻦ ﺳﻌﻴﺪ ﺍﻟﻜﻨﺪﻱ ﺧﺪﺛﻨﺎ ﺍﺑﻦ ﺍﻟﻤﺒﺎﺭﻙ ﻋﻦ ﺣﻴﻮﺓ ﺑﻦ ﺷﺮﻳﺢ ﻋﻦ ﺑﻜﺮ ﺑﻦ ﻋﻤﺮﻭ ﻋﻦ ﻋﺒﺪ ﺍﻟﻠﻪ ﺑﻦ ﻫﺒﻴﺮﺓ ﻋﻦ ﺍﺑﻲ ﺗﻤﻴﻢ ﺍﻟﺠﻴﺸﺎﻧﻲ ﻋﻦ ﻋﻤﺮ ﺑﻦ ﺍﻟﺨﻄﺎﺏ ﻗﺎﻝ ﻗﺎﻝ ﺭﺳﻮﻝ ﺍﻟﻠﻪ ﺻﻠﻲ ﺍﻟﻠﻪ ﻋﻠﻴﻪ ﻭﺳﻠﻢ ﻟﻮ ﺍﻧﻜﻢ ﻛﻨﺘﻢ ﺗﻮﻛﻠﻮﻥ ﻋﻠﻲ ﺍﻟﻠﻪ ﺟﻖ ﺗﻮﻛﻠﻪ ﻟﺮﺯﻗﺘﻢ ﻛﻤﺎ ﻳﺮﺯﻕ ﺍﻟﻄﻴﺮ ﺗﻐﺪﻭ ﺧﻤﺎﺻﺎ ﻭﺗﺮﻭﺡ ﺑﻄﺎﻧﺎ
উমর ইবনুল খাত্তাব ( ﺭﺿﻲ ﺍﻟﻠﻪ ﻋﻨﻪ ) থেকে বর্ণিত, রাসূলুল্লাহ ( ﺻﻠﻲ ﺍﻟﻠﻪ ﻋﻠﻴﻪ ﻭﺳﻠﻢ ) বলেছেন," যদি তোমরা আল্লাহর প্রতি যথাযথ ভরসা করতে তবে তোমরাও সেভাবে রিযিক পেতে যেভাবে পাখিরা পেয়ে থাকে ৷ তারা সকালে খালি পেটে বেরিয়ে যায় এবং বিকেলে ভরপেটে ফিরে আসে ৷"(সুনান তিরমিযী, অধ্যায় ৩৪, অনুচ্ছেদ ৩৩, হাদীস ২৩৪৭, হাদীসের মান: আবূ ঈসা তিরমিযী বলেছেন হাসান-সহীহ, আলবানী বলেছেন সহীহ)
পাখি নিয়ে প্রচলিত শিরক
ভাগ্য গণনা: পবিত্র কোরআনে মহান আল্লাহ বলেন,
ﻳﺎﺍﻳﻬﺎ ﺍﻟﺬﻳﻦ ﺍﻣﻨﻮﺍ ﺍﻧﻤﺎ ﺍﻟﺨﻤﺮ . ﻭﺍﻟﻤﻴﺴﺮ ﻭﺍﻻﻧﺼﺎﺏ ﻭﺍﻻﺯﻟﻢ ﺭﺟﺲ ﻣﻦ ﻋﻤﻞ ﺍﻟﺸﻴﻄﻦ، ﻓﺎﺟﺘﻨﺒﻮﻩ ﻟﻌﻠﻜﻢ ﺗﻔﻠﺤﻮﻥ٥
" হে ইমানদারগণ ! নিশ্চয়ই মদ, জুয়া, প্রতিমা ও ভাগ্য নির্ধারক শরসমূহ শয়তানের অপবিত্র কার্য ছাড়া কিছু নয় ৷ এগুলোকে পরিত্যাগ কর যেন তোমরা সফলকাম হতে পারে ৷"( সূরা মায়িদাহ ৫:৯০)
শুভ বা অশুভ চিন্তা: রাসূলুল্লাহ ( ﺻﻠﻲ ﺍﻟﻠﻪ ﻋﻠﻴﻪ ﻭﺳﻠﻢ ) বলেছেন,
ﻭﻻ ﻃﻴﺮﺓ
"পাখি উড়ে যাওয়ার মধ্যে কোন শুভ-অশুভ নেই ৷"(সহীহ বুখারী, অধ্যায় ৭৬:চিকিৎসা পর্ব, অনুচ্ছেদ ৫৪, হাদীস ৫৭৭৬)
যথাযথভাবে পাখি পালন হারাম কোন কাজ নয় ৷ কারণ নিচের হাদীসটিতে দেখতে পাই তিনি রাসূলুল্লাহ ( ﺻﻠﻲ ﺍﻟﻠﻪ ﻋﻠﻴﻪ ﻭﺳﻠﻢ ) তা নিষেধ করেননি ৷
আনাস ইবনে মালিক ( ﺭﺿﻲ ﺍﻟﻠﻪ ﻋﻨﻪ ) বলেন,
ﻛﺎﻥ ﺭﺳﻮﻝ ﺍﻟﻠﻪ ﺻﻠﻲ ﺍﻟﻠﻪ ﻋﻠﻴﻪ ﻭﺳﻠﻢ ﺍﺣﺴﻦ ﺍﻟﻨﺎﺱ ﺧﻠﻘﺎ ﻭﻛﺎﻡ ﻟﻲ ﺍﺥ ﻳﻘﺎﻝ ﺍﺑﻮ ﻋﻤﻴﺮ " রাসূলুল্লাহ ( ﺻﻠﻲ ﺍﻟﻠﻪ ﻋﻠﻴﻪ ﻭﺳﻠﻢ ) মানুষের মাঝে সর্বোত্তম চরিত্রের অধিকারী ছিলেন ৷ আর আমার এক ভাই ছিল যাকে আবু উমাইর বলে ডাকা হতো ৷"
এরপর তিনি বলেন,
ﻓﻜﺎﻥ ﺍﺫﺍ ﺟﺎﺀ ﺭﺳﻮﻝ ﺍﻟﻠﻪ ﺻﻠﻲ ﺍﻟﻠﻪ ﻋﻠﻴﻪ ﻭﺳﻠﻢ ﻓﺮﺍﺀ ﻗﺎﻝ ﻳﺎ ﺍﺑﺎ ﻋﻤﻴﺮ ﻣﺎ ﻓﻌﻞ ﺍﻟﻨﻐﻴﺮ - ﻓﻜﺎﻥ ﺑﻠﻌﺐ ﺑﻪ
"যখনই রাসূলুল্লাহ ( ﺻﻠﻲ ﺍﻟﻠﻪ ﻋﻠﻴﻪ ﻭﺳﻠﻢ ) আমাদের ঘরে আসতেন তখনই তাকে দেখে বলতেন, হে আবু উমাইর ! তোমার নুগাইর (চড়ুইখানা) কি করেছো !? একথা বলে তিনি তাঁর সাথে খেলতেন ৷"( দেখুন: সহীহ মুসলিম, পর্ব ৩৯: শিষ্ট্যাচার, অনুচ্ছেদ ৫, হাদীস ২১৫০)
এবার মোরগ নিয়ে রসূল ( ﺻﻠﻲ ﺍﻟﻠﻪ ﻋﻠﻴﻪ ﻭﺳﻠﻢ ) এর দুটি কথা বলে আমার আলোচনার ইতি টানব ৷
ﺣﺪﺛﻨﺎ ﻗﺘﻴﺒﺔ ﺑﻦ ﺳﻌﻴﺪ ﺣﺪﺛﻨﺎ ﻋﺒﺪ ﺍﻟﻌﺰﻳﺰ ﺑﻦ ﻣﺤﻤﺪ ﻋﻦ ﺻﺎﻟﺢ ﺑﻦ ﻛﻴﺴﺎﻥ ﻋﻦ ﻋﺒﻴﺪ ﺍﻟﻠﻪ ﺑﻦ ﻋﺒﺪ ﺍﻟﻠﻪ ﺑﻦ ﻋﺘﺒﺔ ﻋﻦ ﺯﻳﺪ ﺑﻦ ﺧﺎﻟﺪ ﻗﺎﻝ ﻗﺎﻝ ﺭﺳﻮﻝ ﺍﻟﻠﻪ ﺻﻠﻲ ﺍﻟﻠﻪ ﻋﻠﻴﻪ ﻭﺳﻠﻢ ﻻ ﺗﺴﺒﻮﺍ ﺍﻟﺪﻳﻚ ﻓﺎﻧﻪ ﻳﻮﻗﻆ ﻟﻠﺼﻼﺓ
যায়দ ইবনে খালেদ ( ﺭﺿﻲ ﺍﻟﻠﻪ ﻋﻨﻪ ) থেকে বর্ণিত, তিনি বলেন, রাসূলুল্লাহ ( ﺻﻠﻲ ﺍﻟﻠﻪ ﻋﻠﻴﻪ ﻭﺳﻠﻢ ) বলেছেন, "তোমরা মোরগকে গালি দিও না কেননা সে সালাতের জন্য জাগিয়ে দেয় ৷"( সুনান আবু দাউদ, অধ্যায় ৩৬: শিষ্টাচার, অনুচ্ছেদ ১১৬, হাদীস ৫১০১, হাদীসের মান: সহীহ, তাহক্বীক: আলবানী)
অন্য একটি বর্ণনায় রাসূল ( ﺻﻠﻲ ﺍﻟﻠﻪ ﻋﻠﻴﻪ ﻭﺳﻠﻢ ) আরও বলেছেন
ﺍﺫﺍ ﺳﻤﻌﺘﻢ ﺻﻴﺎﺡ ﺍﻟﺪﻳﻜﺔ ﻓﺴﻠﻮﺍ ﺍﻟﻠﻪ ﺗﻌﻠﻲ ﻣﻦ ﻓﻀﻠﻪ ﻓﺎﻧﻬﺎ ﺭﺍﺕ ﻣﻠﻜﺎ
"যখন তোমরা মোরগের ডাক শুনতে পাও তখন অাল্লাহ তাআলার অনুগ্রহ প্রার্থণা কর কেননা সে ফেরশতাকে দেখেছে ৷"( সুনান আবু দাউদ, অধ্যায় ৩৬: শিষ্টাচার, অনুচ্ছেদ ১১৬, হাদীস ৫১০২, হাদীসের মান: সহীহ, তাহক্বীক: আলবানী )
পাখি নিয়ে আরও দীর্ঘ আলোচনার প্রয়োজন উপলব্ধি সত্ত্বেও জ্ঞানের সীমাবদ্ধতা ও কলেবর বড় হবার আশঙ্কায় বিরত রইলাম ৷ তবে শুধু আল্লাহর শিখিয়ে দেওয়া ভাষায় বলব,
ﺳﺒﺤﻨﻚ ﻻ ﻋﻠﻢ ﻟﻨﺎ ﺍﻻ ﻣﺎ ﻋﻠﻤﺘﻨﺎ، ﺍﻧﻚ ﺍﻧﺖ ﺍﻟﻌﻠﻴﻢ ﺍﻟﺤﻜﻴﻢ
"হে আল্লাহ ! তুমি মহাপবিত্র ! তুমি আমাদেরকে যে জ্ঞান দিয়েছ তা ছাড়া তো আমাদের কোন জ্ঞানই নেই ৷ নিশ্চয়ই তুমি মহাজ্ঞানী, ও মহাপ্রজ্ঞাময় ৷"( সূরা বাক্বারাহ ২:৩২)

পাখি / মেরাজুল ইসলাম প্রিয়

কোন মন্তব্য নেই:

একটি মন্তব্য পোস্ট করুন